দাড়ি হল
মানুষের দেহের এমন একটি অঙ্গ যা মুখমণ্ডলে অবস্থান করে। ইসলামে দাড়ি
রাখা হুজুর (সল্লাল্লাহু
আলাইহিসসালাম) এর সুন্নত।
ইবনে উমর
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু
আলাইহিসসালাম) এরশাদ করেছেনঃ তোমরা গোঁফ বেশি
ছোট করবে এবং দাড়ি বড় রাখবে। [৫৪৭৩; বুখারি]
অন্য এক
হাদিসে ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহিসসালাম) এরশাদ করেছেনঃ তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করবেঃ দাড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট
করবে। [৫৪৭২;বুখারি]
এবং এই অবস্থাটাই
আমাদের জন্য বেশি উপকারি যা আমরা এখন পালন করতে দ্বিধাবোধ করি এবং পালন না করার
পক্ষে অনেক অহেতুক যুক্তি দাড় করাই
যা সম্পূর্ণ ইসলামের পরিপন্থি। বরং বর্তমান আধুনিক যুগে, ১৫০০ বছরের পুরনো ইসলামের
আহকামই বিজ্ঞানের মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে।
বর্তমানে কোন কিছুর ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের
মাধ্যমে আসলে আমরা ঠিকই বিশ্বাস করতে
পারছি কিন্তু ইসলামের
মাধ্যমে আসলে বিশ্বাস করতে পারছি না যা আমাদের ঈমানের দুর্বলতা প্রকাশেরই
উদাহারন।অপরপক্ষে বর্তমান একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক যুগেও অনেক মুসলিম ভাইকেও এই
অবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী দেখা যায়।
এ সুন্নত পালন না করা প্রকৃতপক্ষে স্বাস্থ্যবিধি
পালন না করার শামিল। দাড়ি রাখার উপকারিতা এবং এর দ্বারা চেহারার সৌন্দর্য
সূর্যালোকের চেয়েও স্পষ্ট। এখানে দাঁড়ি রাখার বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা
বিষয়ক উপকারিতা এবং শেভ করার ক্ষতিসমূহ এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে।
ত্বকের রোগ
শেভ করার
কারনে ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতি হয়ে থাকে। প্রথমত শেভ করার জন্যে ব্যাবহার করা ব্লেড
বার বার ত্বকের উপর চালানো হয় যার ফলে চেহারা স্পর্শকাতর হয়ে উঠে। বার বার ধারালো
অস্ত্র দিয়ে চেহারার ত্বক পরিষ্কার করার কারনে নানারকম রোগ সৃষ্টি হওয়ারও সম্ভাবনা
থাকে। কম ধারালো ব্লেড দিয়ে শেভ করার কারনে ত্বক খরখরে হয়ে যায়, চেহারায় জখম
সৃষ্টি হয় যা সাধারণত খোলা চোখে দেখা যায় না। ক্ষতের কারনে ত্বকের চামড়া উঠে গেলে
সে জায়গা দিয়ে জীবাণু ভিতরে প্রবেশের সুযোগ পায়। মুখে শেভ করা অনেক মানুষের
চেহারায় প্রথমে মামুলি ফুসকুড়ি দেখা দেয় যা পর্যায়ক্রমে সাইকোসিস বারবেক এর মতো
মারাত্মক চর্ম রোগ ধারন করার ক্ষমতা রাখে। এছাড়াও চেহারায় ও দেহের অন্যান্য জায়গায়
নানা রকম রোগ ছড়ায়, যেমনঃ ভাল্গারিস, একনে রোসাকিয়া, এলার্জি, আর্তিকারিয়া, একজিমা, বয়েলস ইত্যাদি।
অপরপক্ষে
সূর্য থেকে নির্গত আলট্রাভায়োলেট রশ্নি অনুভূতিশীল ত্বকের জন্য খুব তাড়াতাড়ি
ক্ষতির কারন হয়ে দেখা দেয়। ফলে ত্বকের রং কালো হয়ে যায়। এছাড়াও এই রশ্নি দেহের
নানা রকম রোগ সৃষ্টির কারন হয়।
ক্রমাগত
শেভ করার কারনে দেহের পিটুইটারি গ্লান্ডে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ
গ্লান্ডের ক্ষতির কারনে নার্ভ সিস্টেম এবং যৌন জীবন প্রভাবিত হয়। বিভিন্ন
অভিজ্ঞতায় ইহা প্রমানিত হয়েছে যে, নিয়মিত শেভ করার অভ্যাস পরিত্যাগ করার কারনে
উল্লেখিত রোগ ছাড়াও অন্যান্য রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া গেছে।
দাড়ি রাখার ফজীলত
দাড়ি
রাখার দ্বারা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার সাথে সাথে অনেক নেকীও হাসিল হয় যা
আমাদের আখেরাতের সম্বল হিসেবে কাজ করবে।
১। দাড়ি
রাখার দ্বারা চেহারার উজ্জ্বলতা (নূর) বৃদ্ধি পায়,
২। দাড়ি
ত্বকের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তির উপায়,
৩। দাড়ি
রাখার দ্বারা ত্বক সুরক্ষিত থাকে,
৪।
ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি থেকে ত্বক রক্ষা পায় ফলে ত্বকের রং বদলায় না,
৫।
রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহিসসালাম) এর সুন্নত পালন হয়,
৬।
আখেরাতের জন্য অনেক নেকী পাওয়া যায়।
এছাড়াও
অনেক লাভ দাড়ি রাখার দ্বারা পাওয়া সম্ভব। এমনকি এই সুন্নত পালন করার দরুন আল্লাহ
তাআলার পক্ষ থেকেও অনেক সাহায্য পাওয়া যায়। তাই চলুন এখন থেকেই এই সুন্নত পালন
করার চেষ্টা করি এবং সেই অনুযায়ী চলার জন্য অপর ভাইকেও দাওয়াত দেই। আল্লাহ আমাদের
সব ভাইকে দাঁড়ি রেখে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহিসসসালাম) সুন্নত পালন করার তৌফিক দান
করুন।
আল্লাহ
আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন